৪০ লাখ দর্শক মাত্র ১৮ ঘন্টায়
ব্যাচেলর পয়েন্ট নাটকে ১৮ ঘণ্টায় ৪০ লাখ দর্শক
অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য ইউটিউবে দর্শকের দেখার বিবেচনায় রেকর্ড গড়ল ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের চতুর্থ মৌসুমের প্রথম পর্ব। শুক্রবার রাত ৮টা ২৫ মিনিটে বাংলাভিশনে প্রচারিত হয় নাটকটির প্রথম পর্ব। পরে রাত ৯টায় প্রকাশিত হয় ধ্রুব টিভি ইউটিউব চ্যানেলে। এরপরেই দর্শক হুমড়ি খেয়ে পড়েন সেখানে। এক ঘণ্টায় ইউটিউবের রিয়েল টাইমে প্রায় ১১ লাখ দর্শক নাটকটি দেখেন। আর গত ১৮ ঘণ্টায় দেখেছেন ৪০ লাখ দর্শক। বাংলাদেশে ইউটিউবে প্রচারিত নাটকের ‘ভিউ’সংখ্যার বিচারে সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে নাটকটি।
এর পরিচালক কাজল আরেফিন অমি বলেন, ‘কাজ করি দর্শককে দেখানোর জন্য। সেই কাজ দর্শক দেখলেই আমাদের প্রাপ্তি আসে। ভালো লাগে। সেই জায়গা থেকে এই নাটক নিয়ে প্রত্যাশা ছিল। কারণ, নাটকটির আগের সিজন থেকে দর্শকের সাড়া পেয়ে আসছিলাম। তা ছাড়া সিজন ৪- এর জন্য দর্শক অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু এতটা সাড়া পাব, এত হইচই হবে নাটকটি নিয়ে, ভাবিনি। একটা অবিশ্বাস্য রকমের ঘটনা ঘটে গেছে। এত অল্প সময়ের মধ্যে এত দর্শক দেখে ফেলেছেন। আমি খুশি।’
কাজল আরেফিন জানান, চতুর্থ মৌসুমের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হওয়ার আগে ৬ মার্চ নাটকটির টাইটেল সংয়ের নতুন ভার্সন প্রকাশিত হয় ইউটিউবে। গানটি নিয়ে দর্শকের আগ্রহ দেখেই নাটকটির প্রতি বাড়তি আগ্রহ আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন পরিচালক।
পরিচালকের কথা, ইউটিউবে রিয়েল টাইমে এক ঘণ্টায় ১১ লাখ দর্শক দেখেছেন নাটকটি। আর ইউটিউবে দেখা গেছে, তিন ঘণ্টায় এক মিলিয়ন, চার ঘণ্টায় দুই মিলিয়ন এবং সাত ঘণ্টায় তিন মিলিয়ন দর্শক দেখেছেন। এখন ১৮ ঘণ্টায় ৪ মিলিয়ন, মানে ৪০ লাখ দর্শক দেখেছেন নাটকটি। এটি একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা।
গত বছরের এপ্রিলে শেষ হয় নাটকটির তৃতীয় মৌসুম। তখন থেকেই দর্শকের চাপ ছিল চতুর্থ মৌসুম করার জন্য। কিন্তু পরিচালক করবেন কি না, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন। এর চার থেকে পাঁচ মাস পর চতুর্থ মৌসুম করার সিদ্ধান্ত হয়।
কাজল আরেফিন বলেন, ‘বিগত মৌসুমগুলোতে দর্শকের প্রত্যাশা সব সময়ই বেশি ছিল। এ কারণে কাজটি করতে চাপও অনুভব করেছি বেশি। কারণ, নতুন সিজনের গল্প থেকে শুরু করে সবকিছু নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হয়েছে। আপনি খেয়াল করলে দেখবেন, এই সিরিজের প্রতিটি সিজনই পর্যায়ক্রমে বড় পরিসরে করা হয়েছে। সিজন ৪-এ এসে আরও বড় পরিসরে করার চেষ্টা করেছি। সেটা কারিগরি, লোকেশন, গল্পের উপস্থাপনা সব দিক থেকেই। পর্বগুলো ক্রমাগত ভালো না লাগলে দর্শক বিরক্ত হতে পারেন। সেটি মাথায় রেখেই কাজটি করা। সুতরাং প্রতি সিজনেই চেষ্টা করি নতুন কিছু দেওয়ার জন্য। সিজন ৩ থেকে সিজন ৪ ভালো করার চেষ্টা ছিল। ইতিমধ্যে সিজন ৪-এর প্রথম পর্বে দর্শক সেটি দেখেছেন।’
নাটকটির সিজন-৪ এর প্রথম পর্বে কোন জায়গায় দর্শকের বেশি আগ্রহ, জানতে চাইলে এই নির্মাতা বলেন, ‘আমরা যেকোনো কাজ করতে গেলে একই শ্রম দিই। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে, নাটকটিতে “গড গিফটেড” একটা ব্যাপার আছে। এটি বিশেষ রহমতের কারণে দর্শকের পছন্দ। দর্শক আগে থেকেই নাটকটি ভালোবেসে ফেলেছেন। নাটকটির আজকের অবস্থান দর্শকের কারণেই হয়েছে। এখন যদি আমাকে অন্য একটি নাটকের কাজ করতে বলা হয়, সেটি “ব্যাচেলর পয়েন্ট”-এর মতো হবে, আমি গ্যারান্টি দিতে পারব না। আমি মনে করি, এই সফলতা পুরোটাই দর্শকের কারণে।’
পরিচালক জানান, এই মৌসুমে দুটি নতুন চরিত্র এসেছে। চরিত্র দুটিতে চমক আছে। তিনি বলেন, আসলে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের চরিত্রগুলোকে দর্শক ভালোবেসে আপন করে নিয়েছেন। এই নাটকের পাঁচ পর্বে গিয়েও কোনো গল্প বলা যায় না। তবে এর প্রতিটি দৃশ্যই দর্শকের কথা মাথায় রেখে তৈরি করতে হয়। দৃশ্যগুলো তাঁরা উপভোগ করেন।
নাটকটির শুভ চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিশু সাব্বির। সিজন-৪ এর প্রথম পর্বের দর্শক সাড়া দেখে দারুণ খুশি মিশু। তিনি বলেন, ‘নাটকটিতে আমাদের অনেক বছরের জার্নি। আমরা তিন-চার বছর ধরে নাটকটি লালন করি। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব কলাকুশলীর জীবনের অংশ হয়ে গেছে নাটকটি। পরিবারের মতো হয়ে গেছেন সবাই। মাঝেমধ্যে আমরা দর্শকের সঙ্গে ডিসকানেক্ট হয়ে যাই।
অনেক দিন বিরতির পর যখন দর্শকের সঙ্গে আমরা কানেক্ট হই, তখন এত পরিমাণ সাড়া পাই যে আমরা বুঝতে পারি দর্শক আমাদের কী পরিমাণ ভালোবাসেন। তাঁদের নিজেদের সঙ্গে আমাদের রাখতে চান। এই নাটকের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে।’
মিশু সাব্বির বলেন, বাংলাদেশে এত ধারাবাহিক, এত এত প্রকল্প তৈরি হচ্ছে, সব ছাপিয়ে নাটকটি এগিয়ে গেছে। এটি সৃষ্টিকর্তার বিশেষ রহমত ছাড়া সম্ভব নয়। কারণ, এত অল্প সময়ে এত বিশাল আকারে সাড়া পড়বে, কল্পনাতীত ব্যাপার।
‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিজন-৪ শুক্রবার থেকে রোববার সপ্তাহে তিন দিন বাংলাভিশনে প্রচারিত হচ্ছে। এরপরেই ধ্রুব টিভি ইউটিউব চ্যানেল প্রকাশিত হয়। পরিচালক জানান, এই সিজনে ৮০ পর্ব পর্যন্ত তৈরি হতে পারে। নতুন দুজন শিল্পী পারসা ইভানা ও আশুতোষ সুজন যুক্ত হয়েছেন নাটকটিতে। আরও অভিনয় করছেন জিয়াউল হক পলাশ, মারজুক রাসেল, চাষী আলম, সাবিলা নূর, সানজানা সরকার, ফারিয়া শাহরিন, সুমন পাটোয়ারি, শরাফ আহমেদ জীবন, আবদুল্লাহ রানা, মনিরা মিঠু, পাভেল, শিমুল প্রমুখ।
৪০ লাখ দর্শক মাত্র ১৮ ঘন্টায়৪০ লাখ দর্শক মাত্র ১৮ ঘন্টায়৪০ লাখ দর্শক মাত্র ১৮ ঘন্টায়৪০ লাখ দর্শক মাত্র ১৮ ঘন্টায়৪০ লাখ দর্শক মাত্র ১৮ ঘন্টায়৪০ লাখ দর্শক মাত্র ১৮ ঘন্টায়৪০ লাখ দর্শক মাত্র ১৮ ঘন্টায়