এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি ? এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখে প্রতিমাসে লক্ষ টাকা আয় করার উপায়
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং কিভাবে করবো এই টাইপের প্রশ্ন অনেকের মনেই আজকাল উঁকিঝুঁকি মারছে। যারা অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করতে চেয়েছেন মূলত তারা প্রত্যেকেই এই এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে টুকটাক জানেন। তবে আজ আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনার এই টুকটাক জ্ঞানকে পরিপূর্ণতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। কেননা আজকের এই আর্টিকেলটি থাকছে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে ধামাকার আয়োজন নিয়ে৷ সুতরাং ১ কাপ কফি নিয়ে বসে পড়ুন এক্ষুনি!
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি ? এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখে প্রতিমাসে লক্ষ টাকা আয় করার উপায়
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
এটি এমন একটি উপায় যার মাধ্যমে আপনি অন্য কোনো মানুষের প্রোডাক্টস বা সার্ভিস কমিশনের ভিত্তিতে সেল করিয়ে দিবেন৷ সুতরাং এক্ষেত্রে আপনাকে কমিশন ভিত্তিক প্রমোশন করতে হবে। বর্তমানে অনলাইনে অসংখ্য এ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক রয়েছে। যা ব্যবহার করে বহিরাগত ওয়েবসাইটের সূত্রে (রেফারেন্সে) কোনো পণ্য বা সেবা বিক্রি করে আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ইনকাম জেনারেট করতে পারেন৷ এই ইনকাম নির্ভর করবে আপনার সেলিংয়ের পরিমাণ এবং সেল করা প্রোডাক্টের প্রাইজের উপর।
এই সেক্টরে প্রতিটি মার্কেটারকেই ধৈর্যসহকারে সময় ও শ্রম দিয়ে কাজ করে যেতে হয়। সবচেয়ে বেশি ভালো হয় নিজস্ব একটি ব্র্যান্ড তৈরি করে ফেলতে পারলে! এতে করে মার্কেটারকে সেলিং নিয়ে তেমন একটা ভাবতেই হয় না। সুতরাং যাদের এই সেক্টরে কাজ করার মতো শক্ত ইচ্ছাশক্তি রয়েছে তারাই পারফেক্টলি এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারবে।
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার?
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বিভিন্ন ধরণের হতে পারে৷ বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইটে এ্যাফিলিয়েট অপশন থাকার পাশাপাশি নিজের কাছে থাকা ইউটিউব চ্যানেল, ফেইসবুক পেইজ বা গ্রুপ, টেলিগ্রাম গ্রুপ, ইনস্টাগ্রাম পেইজ ইত্যাদি ব্যবহার করে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। এক্ষেত্রে আপনাকে অ্যামাজন, স্যানাপডিল ইত্যাদি এ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কের লিংক কালেক্ট করতে হবে। চলুন জেনে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কতভাবে ইনকাম জেনারেট করা যায়ঃ-
১। ফেইসবুক মার্কেটিং
আমরা বর্তমানে ফেইসবুকের মাধ্যমে সবার সাথে কমিউনিকেশন করে থাকি। এই মাধ্যমকে কাজে লাগিয়েও এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। এক্ষেত্রে ফেইসবুকে থাকা বিভিন্ন ফ্রেন্ড, গ্রুপ মেম্বার, পেইজ মেম্বার সকলের সাথে আপনার রেফারেল লিংকটি শেয়ার করতে পারলে সেল জেনারেট হতে খুব একটা অসুবিধা হবে বলে আমি মনে করি না। তবে এই মার্কেটিংয়ের জন্য আপনার ফ্রেন্ডদের সংখ্যা বেশি হতে হবে।
২। সিপিএ মার্কেটিং
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর এই শাখাটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মোটামুটি সহজেই সেল পাওয়া যায় বলে অনেকেই এই সেক্টরের দিকে ঝুঁকছে। কেননা এই সেক্টরে ক্লিক করা মাত্র আপনি একটা কমিশন পাবেন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, মোটামুটি এই সেক্টরটি নতুনদের ইনকাম জেনারেট করার জন্য তুলনামূলক সহজই বলা চলে। তবে এই সেক্টরে সৎ থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৩। ইমেইল মার্কেটিং
এই ধরণের এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের কাজ হলো বিভিন্ন দেশের ই-মেইল সংগ্রহ করে তা কোম্পানির সেলিংয়ের কাজে লাগানো। উদ্দেশ্য কোম্পানির বিভিন্ন আপডেট, অ্যাড ইত্যাদি ই-মেইলের মাধ্যমে প্রচার করা। আজকাল বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সার সাইটে ই-মেইল সংগ্রহের কাজের বেশ প্রচলন শুরু হয়েছে। আপনিও চাইলে কাজটি করে স্বাবলম্বী হতে পারেন সহজেই।
৪। ইউটিউব মার্কেটিং
বিভিন্ন পণ্যের ভিডিও রিভিউ করে আপনি ইউটিউবকে কাজে লাগিয়ে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং টেকনিক ব্যবহার করে কোম্পানি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল করে দিতে পারেন। কোম্পানির পন্য বা সার্ভিস প্রচার করে প্রতি মাসে ভালো একটা টাকা আয় করা সম্ভব। কারণ বর্তমানে বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ দিনের বেশ বড়সড় অংশ কাটিয়ে ফেলছে এই ইউটিউবের পেছনে। এতো বড় অংশের সামনে যখন মোটামুটি বেশকিছু সময় ধরে আপনার পণ্যের এড প্রচারিত হতে তখন তারা তা কিনতে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করবে।
মোবাইল দিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করবো?
যাদের কোনো ল্যাপটপ নেই তারাও মোবাইল দিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম জেনারেট করতে পারেন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ইউটিউব ভিডিওকে শিক্ষক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। ফেইসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, টেলিগ্রাম এসব সোশ্যাল মিডিয়া আজকাল মোবাইলের মাধ্যমেই ব্যবহার করা যায়। আপনার কাজ হবে যেকোনো একটি বিশ্বস্ত এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নেটওয়ার্ক সিলেক্ট করে তার লিংক কালেক্ট করে এসব সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য সেক্টরে শেয়ার করা এবং সেল জেনারেট করা৷
ফেসবুকে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করবো?
বর্তমান সময়ে করোনা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সারাদেশের মানুষ ফেইসবুকেই সময় কাটাতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। এই সুযোগ আপনিও কাজে লাগাতে পারেন। আপনার কোম্পানির প্রোডাক্ট কোয়ালিটি ভালো হলে ফেইসবুকে আপনি নিশ্চিন্তে সময় দিতে পারেন। সেল আসবেই! তবে এক্ষেত্রে আপনাকে প্রফেশনাল হতে হবে। একটি প্রফেশনাল পেইজ, গ্রুপ, আইডিকে আপনার সেলিংয়ের হাতিয়ার মনে করে কাজ করতে হবে। কোনো অস্ত্র যখন নিয়মিত ব্যবহার করা হয় তখন তা সচল থাকে।
ফেইসবুক এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রেও আপনাকে এই রীতি অনুসরণ করতে হবে। নিয়মিত পেইজ, গ্রুপ এবং আইডিতে এক্টিভ থাকতে হবে। প্রোডাক্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন হেল্পফুল কন্টেন্ট আপলোড করতে হবে। নিয়মিতভাবে গ্রাহকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। বারবার প্রোডাক্ট কেনার কথা সরাসরি না বলে তা টেকনিক্যালি বলার চেষ্টা করতে হবে। নতুনবা গ্রাহক বিরক্ত হয়ে ব্লকও করে দিতে পারে! সুতরাং সাবধান! বেশি চালাকি করে নিজের ক্ষতি করা যাবে না! আগেই বলেছি এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে ধৈর্য লাগে!
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবো?
আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং কাজ করেন, তবে আপনি নিজেই অনেককিছু শিখতে পারবেন। যা পরবর্তীতে আপনাকে নিজের একটি আলাদা প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে সাহায্য করবে৷ এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে গিয়ে দেখবেন আপনার লেখালেখি করার প্রতি মোটামোটি দক্ষতা এবং আগ্রহ দু’টোই তৈরি হয়েছে। আপনি চাইলে এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কনটেন্ট রাইটিংয়েরও কাজ শুরু করতে পারেন!
এই মার্কেটিং আপনাকে নিজের সাথে নিজের কমিটমেন্ট করাতে শেখাবে। Keyword Research, Market Analysis ইত্যাদির মতো জটিল কাজগুলি আপনার বেশ সহজ হবে। কাজগুলি শিখে আপনি চাইলে মার্কেটপ্লেসেও কাজ শুরু করতে পারেন। কেননা বর্তমানে মার্কেট রিসার্চ, কম্পিটিশন, কীওয়ার্ড ইত্যাদি বিষয়ের চাহিদা দিনকে দিন বাড়ছে। অনলাইনে অবশ্যই প্রফিট করার জন্য আপনার অভিজ্ঞতা দরকার হয়। সুতরাং আপনার এই সময় দেওয়ার ব্যাপারটি কখনোই বৃথা যাবে না। কারণ এই সময় দিতে দিতে আপনি নিজের স্কিল বাড়াচ্ছেন, অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন, নতুন কিছু শিখতে পারছেন!
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা কি কি?
বর্তমান সময়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অনলাইনে ইনকাম জেনারেট করার জনপ্রিয় উপায় হওয়ায় অনেকেই এই প্রফেশনের দিকে ঝুঁকছে! শুধুই কি জনপ্রিয়তার খাতিরে ঝুঁকছে? নাকি অন্য কোনো সুবিধা রয়েছে? হ্যাঁ! এছাড়াও অনেক সুবিধা রয়েছে এই সেক্টরে!
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে ইনকাম করা যায় বলে আপনাকে অফিসে অফিসে দৌঁড়িয়ে দৌঁড়িয়ে শক্তি খরচ করতে হবে না। পাশাপাশি নিজের ইচ্ছে মতো কাজ করা যায় বলে যেকোনো সময়ে বসে কাজটি সেরে ফেলা যায়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য নিজের কোনো প্রোডাক্টের প্রয়োজন পড়ে না বলে প্রোডাক্ট কিনে স্টক করার মতো ঝামেলায় পড়তে হয় না। ফলে মার্কেটারকে কোনো টাকা পয়সা বিনিয়োগ বা ইনভেস্ট করতে হয় না! এই সেক্টরে চাইলে আপনি ফুলটাইমার হিসেবেও কাজ করতে পারেন! আবার চাইলে পার্ট টাইম কাজ হিসেবে এই সেক্টরে প্রবেশ করতে পারেন। ইচ্ছে মতো ইনকামের পরিমাণ তো থাকছেই!
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি হালাল?
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং পুরোপুরি হালাল। যদি আপনি তা হালালভাবে চালাতে পারেন। অনেকসময় দেখা যায় বিভিন্ন এ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে হারার পণ্য থাকে। তা প্রচারণার দায়িত্ব পড়ে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের উপর। সুতরাং একজন এ্যাফিলিয়েট মার্কেটারের উচিত এদিকটা বিবেচনায় রাখা। যেনো কোনো হারাম পণ্যের প্রচারণা করার সুযোগ না থাকে সে ব্যবস্থা আপনার নিজেকেই করতে হবে। আশা করি ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছেন।
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সেক্টরে ধৈর্য্য ধরে কাজ করতে পারলে সফলতা নিশ্চিত। কারণ এই সেক্টরে ইনকাম শুরু করতে অনেক দিন পর্যন্ত এর পিছনে লেগে থাকতে হয়। সেই মানসিকতা রেখে কাজে নেমে পড়ুন আজই! আশা করি সফল হবেন!
আড়ও পড়ুন
সকল স্কুল ও কলেজ নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২ । All School and College Job Circular 2022
চলমান সকল সরকারি-বেসরকারি চাকরির খবর নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২ (all government job circular 2022)
বাংলাদেশ রেলওয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি | Bangladesh Railway Job Circular 2022 – railway.gov.bd apply
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২ (Dhaka mas transit company job circular 2022)
বাংলাদেশ সুগারক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২ । bari job circular 2022 apply online
সিটি ব্যাংক লিমিটেড নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২ (city bank job circular 2022 apply online)
পল্লী বিদ্যুৎ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২ । palli bidyut job circular 2022
ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ ২০২২ । duet job circular 2022
বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২ । High Tech Park Job Circular 2022
সেভ দ্য চিলড্রেন নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২ (Save the Children Job Circular)