একজন শিক্ষার্থীর তিনবেলার খাবার টিফিন ও বিকালের নাস্তা কেমন হওয়া উচিৎ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আবারো আপনাদের সামনে হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি টিউটোরিয়াল নিয়ে। মানব জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো শিক্ষা জীবন। শিক্ষাজীবন একজন শিক্ষার্থীর জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন শিক্ষার্থীকে অবশ্যই খাবারের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
কারণ একজন শিক্ষার্থী যদি ঠিকমতো তিন বেলা খাবার না খায়। তাহলে তার কখনোই মেধা বিকাশ ঘটবে না। এই কারণে তাকে অবশ্যই সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। তাই শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য আজকে আমরা একজন শিক্ষার্থীর তিনবেলার খাবার টিফিন ও বিকালের নাস্তা কেমন হওয়া উচিৎ তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। চলুন আজকের মূল আলোচনা শুরু করি।
একজন শিক্ষার্থীর তিনবেলার খাবার টিফিন
আপনাদের আগেই বলেছি একজন শিক্ষার্থীর মেধাবিকাশের জন্য অবশ্যই নিয়মিত খাবার গ্রহণ করতে হবে। শুধু খাবার গ্রহণ করলেই হবে না, অবশ্যই আপনাকে সুষম ও প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। বর্তমান সময়ে ফাস্ট ফুড ও ফুটপাতের খাবার খাওয়ার কারণে অনেক শিক্ষার্থীর বিভিন্ন রকমের জটিল ও কঠিন রোগ সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের অবশ্যই ফাস্টফুড ও ফুটপাতের সকল খাবার পরিহার করতে হবে। চলুন একজন শিক্ষার্থীর তিন বেলার খাবার টিফিন দেখে নেই।
সকালে খাবার
দিনের শুরু সকল দিয়ে। তাই সকালের খাবার খুব গুরুত্বপূর্ণ। সারা রাত ঘুমানোর পর সকালে পাকস্থলী খালি থাকে। তাই সকালে খালি পেটে থাকা যাবে না। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে হবে। সবার খাদ্যাভ্যাস কিন্তু এক রকম নয়।
শরীর সুস্থ রাখার জন্য সকালে উঠে খালি পেটে লেবু ও মধু মেশানো পানি খেতে পারেন। তবে অনেকের লেবুতে গ্যাষ্ট্রিকের সমস্যা হয়, তারা শুধু মধু খেতে পারেন। মধুতে শরীরের প্রয়োজনীয় খনিজ ও ভিটামিন থাকে। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। একজন শিক্ষার্থী যেতে নিয়মিত খালি পেটে মধু খায়, তাহলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। যার শিক্ষার্থীর পড়ালেখার কাজে অনেক সাহায্য করে।
আবার অনেকেই সকালে ভাত খায়। এতে শর্করার প্রয়োজন পূরণ হয়। খেতে পারেন রুটি, পরোটা, খিচুড়ি, পাউরুটি বা মুড়ি। আমিষের জন্য সঙ্গে ডিম, ডাল, এক থেকে দুই টুকরা মাংস ও সবজি খেতে হবে। একজন শিক্ষার্থীকে শর্করার পাশাপাশি সকালের খাবারে আমিষ জাতীয় খাবার খেতে হবে। এইজন্য আপনি রুটি বা পরোটার সাথে ডিম খেতে পারেন। যা একজন শিক্ষার্থীর মেধাবিকাশ ঘটতে অনেক সাহায্য করে।
দুপুরের খাবার
সকালের খাবার ৮ টার মধ্যে খেয়ে নিলে দুপুরের খাবার ২ টার মধ্যে খেয়ে নেওয়া একজন শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। দুপুরে এক কাপ ভাত বা রুটির সঙ্গে ডাল, ডিম বা এক থেকে দুই টুকরা মাছ অথবা মাংস ও সবজি খেতে হবে।এতেই শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে।
শরীরে সঠিক চর্বির জোগান দিতে বাদাম, বীজ জাতীয় খাবার খেতে পারেন। আবার দুপুরের খাবারের ২০ মিনিট পর পানি পান করা উচিত। পানি শরীর তাজা রাখে। কিন্তু অনেকটা পানি পান করলে তার প্রভাব পড়ে হজমের উপর। ফলে পেটের নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। যার মধ্যে আলসারও হতে পারে।
এছাড়াও দুপুরের খাবার খাওয়ার পরে আপনি ইচ্ছা করলে একটি আপেল খেতে পারেন। কথায় আছে কোন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন একটি করে আপেল খায়, তাহলে তার শরীরে কোন রোগ সৃষ্টি হবে না। এই কারণে আপনি যদি প্রতিদিন দুপুরে খাবার পর নিয়ম করে একটি করে আপেল খেতে পারেন। তাহলে আপনার শরীরে রোগ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।
রাতের খাবার
রাতে অনেকের মধ্যে খাবার কম খাওয়ার প্রবণতা খুব দেখা যায়। এটা আদৌ ঠিক নয়। একজন শিক্ষার্থীর রাত ৮টার মধ্যে রাতের খাবার খেতে হবে। রাতের খাবারে এক কাপ ভাত বা রুটির সঙ্গে ডাল, ডিম বা এক থেকে দুই টুকরা মাছ অথবা মাংস ও সবজি খেতে হবে। অনেক শিক্ষার্থী আছে রাতে মাছ কিংবা মাংস খেতে চান না। এই অভ্যাস থেকে সরে আসতে হবে। দিনের পর দিন মাছ-মাংস থেকে দূরে থাকলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়। শরীরে শক্তি কমতে শুরু করে। এ জন্য নিয়মিত প্রাণিজ প্রোটিন খেতে হবে।
যত রাত হয়, একজন শিক্ষার্থীর তত অস্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে মন যায় মানুষের। বেশি পরিমাণে তেল নুন দেওয়া প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। পিৎজা বার্গার অর্ডার করার ইচ্ছাও দ্বিগুণ হয়ে যায়। এমনকি মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাও বেড়ে যায় অনেকটা। কি কারনে একজন শিক্ষার্থীকে রাত ৮ টার মধ্যেই স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। তারপর তাকে প্রাত্যহিক পড়াই মনোযোগী হতে হবে।
একজন শিক্ষার্থীর বিকালের নাস্তা কেমন হওয়া উচিৎ
একজন শিক্ষার্থীর জন্য বিকেলের নাস্তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণে একজন শিক্ষার্থীকে বিকালের নাস্তা কেমন হওয়া উচিত তা জানতে হবে। চলুন দেখে নেই,একজন শিক্ষার্থীর বিকালের নাস্তা কেমন হলে সব থেকে ভালো হয়।
যবিকেলের নাস্তায় একটি আদর্শ খাবার হলো ফল। আপেল বা শসা সুন্দর খেতে পারেন। সঙ্গে রাখুন পিনাট বাটার বা পানি ঝরানো দই। এই দুটি খাবার মিশিয়ে খেলে দারুণ লাগে। তবে যেকোনো আস্ত ফলও খেতে পারেন। পেট ভরার পাশাপাশি শরীর পুষ্টিও পাবে সমানভাবে।
সামান্য লবণ,মরিচ,ধনেপাতা,লেবুর রস দিয়ে যদি ভুট্টা অথবা ছোলা সেদ্ধ মেখে নিলে, তাহলে দারুণ স্বাদ হবে। সেদ্ধ ছোলা খেলে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হবে। যা একজন শিক্ষার্থীর মেধা বিকাশ করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও বিকালে চাইলে সেদ্ধ ডিম খেতে পারেন। এর পাশাপাশি যদি মাংস পছন্দ হয় তাহলে সেদ্ধ মাংস খাবেন। আবার বিকেলে একটু সালাত খেতে পারেন। বাদাম ও কিসমিস খেলে শরীরের অনেক উপকার পাওয়া যায়। চাইলে বাদাম ও কিসমিস খেতে পারেন।
পরিশেষে কিছু কথা
এই ছিল আজকে একজন শিক্ষার্থীর তিনবেলার খাবার টিফিন ও বিকালের নাস্তা কেমন হওয়া উচিৎ তা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। আশা করি, আজকের আলোচনা থেকে একজন শিক্ষার্থীর তিন বেলা খাবার টিফিন কেমন হওয়া উচিত তা জানতে পেরেছেন। এর পাশাপাশি বিকেলের নাস্তায় কি কি খাবার একজন শিক্ষার্থীর খাদ্য তালিকায় থাকতে হবে তা বুঝতে পেরেছেন।