এক নজরে রোজার টুকিটাকি-2022
☆ রোজা রেখে যা করা যাবে-
• চুলে,হাতে,পায়ে মেহেদি দেয়া যাবে
• চুলে তেল দেয়া যাবে
• চুল/নখ/অবাঞ্ছিত লোম কাটা যাবে
• হাতে/পায়ে/মুখে/শরীরে তেল/ক্রিম/ভ্যাস্লিন দেয়া যাবে
• ঠোঁটে লিপস্টিক/ভ্যাস্লিন দেয়া যাবে( যদি মুখের ভিতর না যায় )
• টুথপেষ্ট ইউয করে ব্রাশ করা যাবে, তবে সতর্ক থাকতে হবে যেন টুথপেষ্টের স্বাদ গলার ভেতর না যায়, গেলে ভেঙে যাবে। তাই সর্বোচ্চ সতর্কতা হচ্ছে না করা।
• চোখে কাজল/শুরমা/লাইনার/ড্রপ দেয়া যাবে
• গায়ে আতর/সেন্ট/বডি স্প্রে/পাউডার দেয়া যাবে।(ছিটাফোঁটা যেন মুখে না যায় )
• মুখে অক্সিজেন নেয়া যাবে(তবে অন্য মেডিসিন(দৃশ্যমান কিংবা তরল) মিক্স থাকলে নেয়া যাবেনা)
• ইঞ্জেকশন দেয়া যাবে
• থুতু গেলা যাবে
• মিসওয়াক করা যাবে
• অজুর কুলির পর মুখ ঝেড়ে পানি ফেলার পর মুখে থুতুর সাথে যা থাকে তা গেলা যাবে
• জিহ্বার আগা দিয়ে খাবারের স্বাদ নেয়া যাবে(তবে না গিলে তা ফেলে দিতে হবে
☆ রোজা ভাঙবে না যদি-
• কেউ ভুলবশত কিছু খেয়ে ফেলে
• অনিচ্ছাকৃত হালকা বা মুখ ভরে বমি হলো( কেউ যদি মুখে আসার পর আবার ইচ্ছাকৃত গিলে ফেলে তবে ভেঙে যাবে,অনিচ্ছাকৃত আবার গলা দিয়ে নেমে গেলে ভাঙবে না)
• স্বপ্নদোষ হয়
• দাঁত ফেলে
• হিজামা করে (শিঙা লাগানো)
• নাক দিয়ে রক্ত পড়ে
• রক্ত দান করে
• বেহুশ হয়ে যায়
• গলায় কিট,মশা ইত্যাদি অনিচ্ছায় ঢুকে যায়
• কান/নাক ফোঁড়ায়
• কান দিয়ে পানি প্রবেশ করে (তবে যদি কানের পর্দা ফাটা থাকে তখন রোজা ভাঙবে
• রক্ত বা সেলাইন নিলে রোজা মাকরুহ হবে নাকি রোজা ভাঙবে বা ভাঙবে না এই প্রশ্ন আসার আগে বলে রাখা ভাল,রোগীর অবস্থা যদি এতই খারাপ হয় যে তাকে রক্ত বা সেলাইন নিতে হচ্ছে সে ক্ষেত্রে রোগীর জন্য রোজা ভাঙা জায়েজ। বরং উচিৎ হবে এমন হালতে রোজা না করে চিকিৎসা নেয়া।
☆ রোজা ভেঙে যাবে যদি-
• হায়েজ/নিফাস হয়
• ইচ্ছাকৃত কিছু খায়
• ফরজ গোসল করার সময় গড়গড়া ও নাকের একদম ভিতরে পানি পৌছায়।( স্বাভাবিক ভাবে কুলি ও নাক পরিষ্কার করবে)
• সিগারেট/বিড়ি/হুক্কা/টানে
• স্বামী-স্ত্রী গভির চুম্বনের ফলে যদি একে অপরের থুতু গিলে ফেলে
• সহবাস করে
• নাকে ড্রপ দেয়
• পায়ুপথ দিয়ে মেডিসিন/পানি ইত্যাদি প্রবেশ করায়(তবে যদি চিকিৎসার জন্য পাইপ প্রবেশ করায়,ও সেই পাইপের সাথে যদি পানি বা কোনো মেডিসিন প্রবেশ না করায় তবে রোজা ভাঙবে না)
• পাথর/লোহার টুকরা, ফলের বিচি গিলে ফেলে
• ইনহেলার /নেবুলেইজার নেয়
☆ রোজার কাজা/কাফফারা/ফিদিয়া
• হায়েজ/নিফাস বা অন্য কোনো অসুস্থতা/দুর্বলতা বা মুসাফির।হওয়ার কারণে যদি কারো রোজা না রাখা হয়,তবে সে একটি রোজার পরিবর্তে একটি রোজা কাজা আদায় করে নিবে
• যদি কোন প্রয়োজন ছাড়া এমনিতেই ইচ্ছা করে রোজা ভেঙে ফেলে,তবে বিরতিহীন ৬০টি রোজা কাফফারা ও একটি কাজা সহ মোট ৬১ টি রোজা রাখবে।বিরতিহীন বলতে বুঝায়, কেউ যদি ৫০টি লাগাতার রেখে একদিন বাদ দেয় তবে তাকে আবার শুরু থেকে ৬০টি রাখতে হবে।তবে মহিলারা রোজার মাঝে হায়েজ আসলে,তা থেকে পবিত্র হয়ে যেখানে থেমেছিল তারপর থেকে কাফফারা আদায় করবে।
• ইচ্ছাকৃত সহবাস করে ফেললে বিরতিহীন ৬০টি রোজা কাফফারা ও একটি কাজা সহ ৬১টি আদায় করবে।বিরতিহীন বলতে বুঝায়, কেউ যদি ৫০টি লাগাতার রেখে একদিন বাদ দেয় তবে তাকে আবার শুরু থেকে ৬০টি রাখতে হবে।মহিলারা রোজার মাঝে হায়েজ আসলে,তা থেকে পবিত্র হয়ে যেখানে থেমেছিল তারপর থেকে কাফফারা আদায় করবে।
• কেউ যদি এই কাফফারা আদায় করতে না পারে কোনো খুব বেশি অসুস্থতা( কোনো মরন ব্যাধি ) বা বার্ধক্যজনিত কারণে, তবে সে ৬০ জন মিসকিন কে ২ বেলা পেট ভরে খাওয়াবে।
• কেউ যদি এমন ভাবে অসুস্থ হয় যে তার আর সুস্থ হওয়ার লক্ষণ নেই,অর্থাৎ এমন কোন সম্ভাবনা নেই যে সে সুস্থ হয়ে এরপর কাজা আদায় করবে,যেমন কারো মরন ব্যাধি হলো,সেই ক্ষেত্রে সে ফিদিয়া আদায় করবে। ফিদিয়া হচ্ছে একটি রোজার পরিবর্তে একজন মিসকিন কে খাওয়ানো(১.৫কেজি পরিমান চাল/গম/খেজুর।পুরো একমাসের ৪৫ কেজি।)তবে কেউ যদি আর সুস্থ হবেনা ভেবে ফিদিয়া আদায় করে দেয় ও পরবর্তীতে সুস্থ।হয় তবে তার আদায়কৃত ফিদিয়া সাদাকা হসেবে গন্য হবে ও তাকে রোজা গুলোর কাজা আদায় করতে হবে।
☆অতিরিক্ত কিছু কথাঃ
• রোজা শুদ্ধ ভাবে পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য অনেক শর্ত থাকলেও তারাবির নামাজের সাথে রোজার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অনেকে মনে করেন তারাবির ২০ রাকাত নামাজ আদায় না করলে রোজা শুদ্ধ হবেনা।
কেউ যদি সব শর্ত রেখে রোজা রাখেন কিন্তু তারাবি না পড়েন তবে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।
• তবে এও বলে রাখি, সারাবছর নয় বরং এই একটি মাসেই আমরা বাড়তি সোওয়াবের আশায় তারাবির নামাজ আদায় করে থাকি। আর রমজান মাসটাই হলো অনেক বেশি করে ইবাদাত করার মাস। তাই কোনো অজুহাত রাখবোনা তারাবির নামাজ না পড়ার।
নোটঃ রোজার কাজা বা কাফফারা আদায়ের সময় তারাবির নামাজ পড়তে হবে না।
• কারো যদি গোসল ফরজ হয় কিন্তু ফজরের ওয়াক্তের আগে সময় না পায় গোসল করার তবে সে আগে সাহরি খেয়ে নিবে ও আজানের পর গোসল করতে পারবে।
☆ রোজার নিয়তঃ নিয়ত অর্থ সংকল্প করা, বা মনের উদ্দেশ্য, আমরা রোজা রাখার জন্য যে ঘুম থেকে উঠছি,বা সাহরি খাচ্ছি, এটাই আমাদের নিয়ত। নিয়তের জন্য আলাদা ভাবে “ নাওয়াইতু আনাসুমু গাদান … ” এই দুয়াট পড়া সুন্নত বিরোধী। অর্থাৎ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিংবা উনার সাহাবীগন কেউই এমন টা বলেন নাই। এখানে আরেকটা বিষয় বলা জরুরি,আরবি হিসেবে দিন শুরু হয় মাগরিব থেকে। বা একটা দিন হলো এক মাগরিব থেকে আরেক মাগরিব। দেখা যাচ্ছে নিয়তে যা বলছি নাওয়াইতু আন আসুমা গদান এর অর্থ আমি আগামীকাল রোজা রাখার নিয়ত করছি। এর দ্বারা বিষয় টা এমন হলো এইযে আমি আজ রোজা রাখছি অথচ নিয়ত টা করেছি আগামীকাল রোজা রাখার জন্য অর্থাৎ আমি আজ নিয়ত ছাড়াই রোজা করলাম!
নোটঃ নিয়তের জন্য মুখে দুয়া বলা আবশ্যক মনে করা সুন্নতের খিলাফ। তাই এই কাজ থেকে ফিরিয়ে নিতে অনেকে এভাবে বলেন যে নিয়ত বলতে হয়না। এবং যাকে বলা হয় তিনি বিষয়টি ভুল বুঝে মনে করেন, যে নিয়তই করতে হয়না। তখন তিনি সন্দেহে পড়ে যান এবং নিয়ত করা থেকেও বিরত থাকেন। অথচ নিয়ত ছাড়া কোন ইবাদাতই গ্রহণযোগ্য নয়। মূলত নিয়ত হলো করার জিনিস,বলার জিনিস নয়।নিয়ত মুখে বলা জরুরি নয়। অন্তরে করা জরুরি।আমাদের কে বুঝতে হবে আমাদের সব আমল কবুল হয় নিয়তের উপর নির্ভর করে তাই সব কাজের স্পষ্ট নিয়ত করবো। মুখে দুয়া বলে নয় বরং অন্তরে সংকল্প করা।
রমজানের ফজিলত
মুসলমানদের জন্য রমজান মাস হলো শ্রেষ্ঠ নিয়ামতের মাস। রাসুলে কারীম (স) বলেন, রোজা প্রকৃত ঈমানদারের জন্য ঢালস্বরূপ। রহমতের এই মাস শুরু হলে রহমতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। রমজানের রোজার বিশেষ ফজিলত নিয়ে আলোচনা করা হলো।
রোজার পরিচয়ঃ রোজা শব্দটি ফারসি। রোজার আরবি অর্থ হচ্ছে সওম, বহুবচনে সিয়াম। সওম বা সিয়ামের বাংলা অর্থ হলো, বিরত থাকা। ইসলামী শরীয়তে সওম হল আল্লাহর নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্যে সওয়াবের প্রত্যাশায় নিয়তসহ সুবহে সাদিকের শুরু থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া ও যাবতীয় পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা।
রজব মাস আসা মাত্রই নবী করিম (সঃ) পবিত্র রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন এবং আল্লাহর দরবারে দোয়া করতেন, “হে আল্লাহ রজব ও শাবান মাসে আমাদের জন্য বরকত দান করুন এবং আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।” পবিত্র কোরআন ও হাদিসে মাহে রমজানের অনেক ফজিলতের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
রমজান মাস উপলক্ষে শ্যাডো নিউজের আজকের প্রথম পর্বে থাকছে রমজানের ফজিলত, রোজা রাখার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া।
ক. রমজান মাসে হেরা গুহায় মানবতার মুক্তির সনদ ‘মহাগ্রন্থ আল কুরআন’ অবতীর্ণ হয়েছে।
খ. এ মাসেই মক্কা বিজয় হয়।
ঘ. এ মাসে ইসলামের প্রথম জিহাদ ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
ঙ. এ মাসে হযরত ইব্রাহিম (আ.) সহিফা লাভ করেছিলেন।
চ. এ মাসে হযরত ইসা (আ.) ইঞ্জিল কিতাব লাভ করেন।
ছ. হযরত দাউদ (আ.) যাবুর কিতাব লাভ করেন।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে মাহে রমজানের ফজিলতঃ
মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন :
﴿ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ-
হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।’ [সূরা বাকারা, ১৮৩ আয়াত]
মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন রমজানের ফজিলত সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلاَ يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ-
রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।[সুরা বাকারা-১৮৫]
এই মাসে রহমতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, রমজান মাস শুরু হলেই রহমতের দরজাগুলো খুলে দেয়া, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া এবং শয়তানদের শিকলে আবদ্ধ করা হয়’। (বুখারী -১৮৯৮)
পবিত্র রমযান মাসে রোজা রাখলে মহান আল্লাহ তায়ালা তার বান্দার পুর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্নিত, হুজুর (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের নিয়তে রমজান মাসের রোজা রাখবে তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের নিয়তে রমযান মাসের রাতে এবাদত করে তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের নিয়তে কদরের রাতে ইবাদত করে কাটাবে তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বুখারী ও মুসলিম)
এই মাস হলো দোয়া কবুলের মাস। রাসুলে করিম (স) বলেছেন, ‘(রমজানের) প্রতি দিন ও রাতে (জাহান্নাম থেকে) আল্লাহর কাছে বহু বান্দা মুক্তিপ্রাপ্ত হয়ে থাকে। প্রত্যেক বান্দার দোয়া কবুল হয়ে থাকে (যা সে রমজান মাসে করে থাকে)।’ (সহীহ সনদে ইমাম আহমদ কর্তৃক বর্ণিত-৭৪৫০)
রোজাদারের জন্য কিয়ামতের দিন স্বয়ং রাসুল (স) সুপারিশ করবেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “কিয়ামতের দিন রোজা এবং কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে রব! আমি তাকে দিনের বেলায় পানাহার ও প্রবৃত্তির কামনা হতে বাধা দিয়েছি; সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুমাতে দেইনি; সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। ফলে এ দুয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।”(মুসনাদ-৬৬২৬)।
রোজা হলো ইহকাল ও পরকালের সুখ-শান্তি লাভের উপায়। রাসূল (স) বলেছেন, “রোজাদারের জন্য দুটো খুশির সময় রয়েছে। একটি হলো ইফতারের সময় এবং অন্যটি স্বীয় প্রভু আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়ার সময়।”(বুখারী-১৮০৫)
সেহরী বা রোজা রাখার নিয়তঃ
نويت ان اصوم غدا من شهر رمضان المبارك فرضا لك ياالله فتقبل منى انك انت السميع العليم
(নাওয়াইতু আন আছুমা গদাম মিং শাহরি রমাদ্বানাল মুবারকি ফারদ্বল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাক্বব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আংতাস সামীউল আলীম)
অর্থ: হে আল্লাহ! আগামীকাল পবিত্র রমযান মাসে তোমার পক্ষ হতে ফরয করা রোজা রাখার নিয়ত করলাম, অতএব তুমি আমার পক্ষ হতে কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
রোজার বাংলা নিয়তঃ হে আল্লাহ পাক! আপনার সন্তুষ্টির জন্য আগামীকালের রমাদ্বান শরীফ-এর ফরয রোযা রাখার নিয়ত করছি। আমার তরফ থেকে আপনি তা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা , সর্বজ্ঞাত।
ইফতারের দোয়াঃ
اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِيْمِيْن
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিকের মাধ্যমে ইফতার করছি।
ইফতারের বাংলা দোয়াঃ হে আল্লাহ তায়ালা আমি আপনার নির্দেশিত মাহে রমাজানের ফরয রোজা শেষে আপনারই নির্দেশিত আইন মেনেই রোজার পরিসমাপ্তি করছি ও রহমতের আশা নিয়ে ইফতার আরম্ভ করছি। তারপর “বিসমিল্লাহি ওয়া’আলা বারাকাতিল্লাহ” বলে ইফতার করা।
ইফতারের পর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করতে হয়।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন-
ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ
উচ্চারণ : ‘জাহাবাজ জমাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।’
অর্থ : ‘(ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো।’ (আবু দাউদ, মিশকাত)
মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের আশায় এবং তাকওয়া অর্জনের উদ্দেশ্যে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের নিষ্ঠার সাথে সাওম পালন করা আবশ্য। মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য রমজানের রোজা পালনের তৌফিক দিন। আল্লাহ আমাদের রোজার পূর্ণাঙ্গ হক আদায়সহ রমজানের দিনগুলোর রোজা পালনের তাওফিক দান করুন।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের তৃতীয়তম স্তম্ভ রোজা। মাহে রমজান আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাস। এ মাস কোরআন নাজিলের মাস। রহমত- বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। এ মাস তাকওয়া ও সংযম প্রশিক্ষণের মাস।
মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন :
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلاَ يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ-
রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবংসত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ, আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে, সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ্ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না। যাতে তোমরা গণনা পূরণ করো এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ্ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা করো, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো।(আল-বাকারা- ১৮৫)
হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ(সা:)ইরশাদ করেন, তোমাদের নিকট রমজান মাস উপস্থিত। এটা এক অত্যন্ত বারাকতময় মাস। আল্লাহ তা’য়ালা এ মাসে তোমাদের প্রতি সাওম ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দরজাসমূহ উন্মুক্ত হয়ে যায়, এ মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এ মাসে বড় বড় শাইতানগুলোকে আটক রাখা হয়।আল্লাহর জন্যে এ মাসে একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়েও অনেক উত্তম। যে লোক এ রাত্রির মহা কল্যাণলাভ হতে বঞ্চিত থাকল, সে সত্যিই বঞ্চিত ব্যক্তি। (সুনানুন নাসায়ী:২১০৬)
পবিত্র রমজান মাসে একটি ফরজ ইবাদতে অন্য সময়ের করা ৭০টি ইবাদতের সওয়াব পাওয়া যায়। রসুলুল্লাহ তাঁর ভাষণে বলেছেন, যে ব্যক্তি এই মাসে একটি কল্যাণময় কাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করবে সে অন্য সময়ের ফরজ ইবাদতের সমান সওয়াব পাবে এবং যে ব্যক্তি এই মাসে একটি ফরজ ইবাদত আদায় করবে সে অন্য সময়ের ৭০টি ফরজের সওয়াব পাবে।
রমজানের ফজিলত সম্পর্কে বিখ্যাত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করীম (সা.) বলেছেন, রমজানের জন্য বেহেশত সাজানো হয় বছরের প্রথম থেকে পরবর্তী বছর পর্যন্ত। তিনি বলেন, যখন রমজান মাসের প্রথম দিন উপস্থিত হয় বেহেশতের গাছের পাতা হতে আরশের নিচে বড় বড় চোখ বিশিষ্ট হুরদের প্রতি বিশেষ হাওয়া প্রবাহিত হয়। তখন তারা বলে, হে পালনকর্তা! আপনার বান্দাদের মধ্য হতে আমাদের জন্য এমন স্বামী নির্দিষ্ট করুন যাদের দেখে আমাদের চোখ জুড়াবে এবং আমাদের দেখে তাদের চোখ জুড়াবে।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্নিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে শরীয়ত সম্মত কোনো কারণ ছাড়া রমজানের একটি রোজাও ভাঙে সে রমজানের বাইরে সারাজীবন রোজা রাখলেও এর বদলা হবে না। (তিরমিযী, আবু দাউদ)।
হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ(সো:)ইরশাদ করেন, সিয়াম ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ কোনোদিন সিয়াম পালন করলে তার মুখ থেকে যেন অশ্লীল কথা বের না হয়। কেউ যদি তাকে গালমন্দ করে অথবা ঝগড়ায় প্ররোচিত করতে চায় সে যেন বলে, আমি রোজাদার। (সহীহ বুখারী: ১৮৯৪)
সেহরির ফজিলতঃ
সেহরি : ‘সেহরি’ আরবি শব্দ। অর্থ শেষ রাত, দিনের প্রথমাংশ ইত্যাদি। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় মাহে রমজান এর রোজা রাখার নিয়তে শেষ রাত বা সুবেহ সাদিকের পূর্ব মুহূর্তের পানাহারকে সেহরি বলে। সেহরি খাওয়া সুন্নাত এবং উত্তম কাজ।
রাসুলুল্লাহ (সা.) স্বয়ং সেহরি খেয়েছেন এবং অন্যদের খাওয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছেন। সাহাবায়ে কিরামও সেহরি খেয়ে রোজা রাখতেন। এ সম্পর্কে সাহাবি হজরত জায়িদ ইবনে সাবিত (রা.) বলেছেন, ‘আমরা রাসুলে করিম (সা.)-এর সঙ্গে খেয়েছি।তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, সেহরি ও নামাজের মধ্যে (ফজরের) কী পরিমাণ সময় ছিল? তিনি উত্তরে বললেন, “৫০ আয়াত তিলাওয়াতের সমান।”’ মোটকথা, সেহরি দেরিতে খাওয়া উত্তম।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘হে আমার উম্মতগণ! তোমরা সেহরি খাবে। কেননা সেহরির প্রতিটি লোকমার পরিবর্তে মহান আল্লাহ তায়ালা এক বছরের ইবাদতের সওয়াব দান করে থাকেন।’
সেহরির বিষয়ে তাগিদ দিয়ে রাসুলে করিম (সা.) বলেন, ‘তোমরা ইহুদিদের বিপরীত কার্য কর। তারা সেহরি খায় না, যদিও তারা রোজা রাখে। আর যারা সেহরি খায় না তাদের চরিত্র ইহুদিদের চরিত্রের মতো হবে।’ সেহরি খাওয়া হয় রোজা রাখার নিয়তে।
সেহেরির সময় দোয়া কবুল: মাহে রমজান এ সেহেরির সময় দোয়া কবুল হয়। তাবরানি সংকলিত হাদিস গ্রন্থের একটি হাদিসে উদ্ধৃত হয়েছে, রসুলে করিম (সা.) বলেছেন, রাতের সেহেরির সময় দোয়া কবুল হয়।
রাসুল (সা.) সেহরি খেতে আদেশ করেছেন। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সেহরি খাও, কারণ সেহরিতে বরকত রয়েছে।’ (বুখারী ও মুসলিম)
রোজার সেহরির আধ্যাত্মিক ফজিলত হচ্ছে, সেহেরি খাওয়ার উপলক্ষে বান্দা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে ঘুম থেকে উঠে। আর এসময় মহান আল্লাহ পাক দুনিয়ার আসমানে এসে ডেকে ডেকে বলেন, কেউ কি আছো যে আমায় ডাকছে? আমি তার ডাকে সাড়া দেবো। কেউ কি আছে আমার কাছে ক্ষমা চায়? আমি তাকে মাফ করে দেবো। এভাবে ভোর পর্যন্ত তিনি বান্দার রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের জন্য অবিরত ডেকে যান। তাই সেহেরির এসময় অনেক মূল্যবান ও বরকতপূর্ণ।
সেহরির সময়সীমা
যতক্ষণ পর্যন্ত সুবহে সাদিক না হয় অর্থাৎ পূর্ব দিগন্তে সাদা বর্ণ না দেখা যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত সেহরি খাওয়ার অনুমতি আছে। সুবহে সাদিক হয়ে গেলে তারপর আর কিছু খাওয়া-দাওয়ার সুযোগ নেই।
সেহরি খাওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রাত আসা পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৭)
পবিত্র রমজান মাসের দ্বিতীয় দশক ‘মাগফিরাত’
মহান আল্লাহর তায়ালার একটি গুণ হচ্ছে ক্ষমা করা। পবিত্র কোরআনে ক্ষমার ব্যাপারে তিনটি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। যথা: ‘গাফফার’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে অত্যন্ত ক্ষমাশীল। পবিত্র কোরআনে এ শব্দটি ৫বার উল্লেখ হয়েছে। ‘গাফুর’, যার অর্থ হচ্ছে পরম ক্ষমাশীল। এ শব্দটি পবিত্র কোরআনে ৯১ বার উল্লেখ হয়েছে। ‘গাফির’, যার অর্থ হচ্ছে ক্ষমাকারী।
পবিত্র কুরআনুল কারীমের সুরা মুমিন-এর ৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে,
غَافِرِ الذَّنبِ وَقَابِلِ التَّوْبِ شَدِيدِ الْعِقَابِ ذِي الطَّوْلِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ إِلَيْهِ الْمَصِيرُ-
পাপ ক্ষমাকারী, তওবা কবুলকারী, কঠোর শাস্তিদাতা ও সামর্থবান। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তাঁরই দিকে হবে প্রত্যাবর্তন।
পবিত্র কোরআনের সুরা আয-যুমার ৫ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে,
خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ يُكَوِّرُ اللَّيْلَ عَلَى النَّهَارِ وَيُكَوِّرُ النَّهَارَ عَلَى اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُسَمًّى أَلَا هُوَ الْعَزِيزُ الْغَفَّارُ-
তিনি যথাযথভাবে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। তিনি রাতকে দিনের উপর এবং দিনকে রাতের উপর জড়িয়ে দিয়েছেন এবং নিয়ন্ত্রণাধীন করেছেন সূর্য ও চাঁদকে। প্রত্যেকে এক নির্ধারিত সময় পর্যন্ত চলছে। জেনে রাখ, তিনি মহাপরাক্রমশালী, পরম ক্ষমাশীল।
পবিত্র কুরআনের সুরা জুমার ৫৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে,
قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ-
বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দার প্রতি বিভিন্ন সময় তাঁর গাফফার এবং গফুর নামের বদৌলতে ক্ষমা করেন। বিশেষ করে পবিত্র মাহে রমজান এ মানুষকে ক্ষমা করে দেন। কারণ, এ মাসটি হচ্ছে রহমতের মাস, ক্ষমার মাস, কোরআন নাযিলের মাস।
হাদিস শরিফে এসেছে, শেষ রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে ডেকে বলতে থাকেন: কে আছো ক্ষমা চাওয়ার? ক্ষমা চাও, আমি মাফ করে দেব। একদা উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.) রাসুলে পাক (সা.)–কে প্রশ্ন করেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.) আমি যদি শবে কদর পাই, তাহলে আমি ওই রাতে কী দোয়া পড়ব? উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন: হে আয়িশা! তুমি পড়বে, হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাকে পছন্দ করেন; অতএব আমাকে আপনি ক্ষমা করে দিন।