Quiz

ফার্মেসি ব্যবসা কি এবং কেমন

ADX Ads

Table of Contents

ADX ads 2

বাংলাদেশে ফার্মাসি ব্যবসা শুরু করার সহজ পদক্ষেপ

ফার্মেসির ব্যবসা সব সময় একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। বিশেষ করে আমাদের ভারতে যে হারে দিন দিন অসুস্থতার পরিমাণ বাড়ছে তাতে করে ফার্মেসিও বাড়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।  তুমি দেখবে মানুষ খেতে পাক না পাক ঔষধ কিন্তু ঠিকই খায়। যে শিশু জন্মগ্রহণ করছে সেই শিশু থেকে শুরু করে যে বৃদ্ধ মানুষটি মৃত্যুশয্যায় রয়েছে সেও কিন্তু ওষুধ খাচ্ছে । তাই একটি মেডিকেল শপ বা ফার্মাসি করে তুমিও কিন্তু একজন সফল উদ্যোক্তা বনে যেতে পারো। আসো এবার দেখে নেই একটি ফার্মেসির দোকান সহজেই শুরু করতে চাইলে কি বিষয়গুলোতে তোমার জোড় দিতে হবে। 

ফার্মেসি ব্যবসা কি এবং কেমন

মেডিকেল ফার্মেসি ব্যবসা কে কে করতে পারবে?

মেডিকেল ফার্মাসির ব্যবসা তোমাদের মধ্যে তারাই করতে পারবে যারা বি ফার্মা, ডি ফার্মা, এম ফার্মা, ফার্মা ডি  এর কোর্স  করেছে। তোমার যদি এসব কোর্সের কোন টাই  করা না থাকে তবে উদাস হওয়ার কিছু নেই কারণ তুমি মাসিক বেতনে যে কোন একজন ফার্মাসিস্ট কে রেখে দিলেই হয়ে গেল। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যে, সেই ফার্মাসিস্ট যেনো  তোমার দোকান খোলা থাকা পর্যন্ত তোমার দোকানে থাকে । অন্যথায়  মেডিকেল ইন্সপেক্টর এর ঝামেলায় পড়তে হতে পারে যা তোমার ব্যাবসা শুরু করার জন্য মোটেও শুভকর হবে না। 

আজকাল ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ফার্মাসিস্ট ডিগ্রী কিনে নিয়ে মেডিকেল ফার্মেসির দোকান চালাচ্ছে। তুমি যদি দীর্ঘ সময় ধরে ব্যাবসাটি করে যেতে চাও তাহলে এই জাল ডিগ্রী নেওয়ার ফলে তোমাকে একটা না একটা সময় অবশ্যই বিপদে পরতে হতে পারে।  তাই জাল ডিগ্রি নিতে তোমাকে যারা পরামর্শ দিবে তাদের পরামর্শ  থেকে অবশ্যই তোমাকে বিরত থাকতে হবে। 

ফার্মেসি ব্যবসায় শিক্ষগত যোগ্যতা

ওষুধের ব্যবসা করতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা মূল বিষয় নয়, অভিজ্ঞতা থাকাটাই মূখ্য। কেউ যদি এসএসসি করে থাকে তবে, সে চাইলে এই ব্যবসা করতে পারে। এসএসসির নিচে হলেও করা সম্ভব। মূলত এই ব্যবসা করার জন্য অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। যারা ওষুধের নাম পড়তে জানে তার যদি দীর্ঘদিন এই পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে, তারা খুব সু্ন্দরভাবেই এই ব্যবসা করতে পারবে।

ফার্মেসি ব্যবসা কি এবং কেমন
ফার্মেসি ব্যবসা কি এবং কেমন

মেডিকেল ফার্মাসি বা মেডিকেল শপ এর রেজিস্ট্রেশন কিভাবে করে ?

মেডিকেল ফার্মাসির রেজিস্ট্রেশন এর বিষয়ে মানুষ খুব বেশি ঝামেলায় পড়ে। এমন ঝামেলা থেকে  পরিত্রাণ পেতে রেজিস্ট্রেশনের বিষয়গুলোকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। আসো দেখে নিই ভাগ গুলো কি এবং প্রত্যেক ভাগে তোমাকে কি কি কাজ গুলো করতে হবে। 

১। দোকানের রেজিস্ট্রেশনঃ

যদি দোকানটি তোমার নিজের হয়ে থাকে তবে তার কাগজপত্রাদি থাকতে হবে আর যদি দোকানটি তোমার ভাড়া নেওয়া হয় তবে ভাড়ার চুক্তিপত্র থাকতে হবে। 

২। তোমার ব্যবসা রেজিস্ট্রেশনঃ

তোমার ব্যবসা তুমি দুইভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। একটা হলো তুমি নিজে মালিক আরেকটা পার্টনারশিপ। সেক্ষেত্রে তোমার ব্যাবসার পার্টনার যদি দি জন হয় তবে  দোকান থেকে যেটা আয় হবে সেটা তোমাদের  পার্টনারদের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ হয়ে যাবে

৩। জিএসটিঃ

জিএসটি বা Good and Service Tax সম্পর্কে তো তুমি জানোই। জিএসটি দোকানের জন্য খুব জরুরি একটা বিষয়। আজকাল জিএসটি করাটা খুব সহজ হয়ে গেছে। বিশেষ করে  এখন অনলাইনেই প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র জমা দিয়ে খুব সহজেই জিএসটি করে নেওয়া যায়। 

৪। ড্রাগ লাইসেন্সঃ

মেডিকেল ফার্মেসি খোলার জন্য ড্রাগ লাইসেন্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ড্রাগ লাইসেন্স দু’প্রকারের হয়ে থাকে (১) RDl বা Retail Drag Lisence (২) WDL বা Wholesale Drug Licence  তুমি যদি ঔষধপত্র খুচরো ভাবে বিক্রি করতে চাও তবে তোমাকে  আর ডি এল ত বেছে নিতে হবে আর যদি পাইকারি বিক্রি করতে চাও তাহলে ডব্লিউ ডি এল বেছে নিতে পারো। 

তবে খুব সহজে  ওষুধের দোকান খুলতে চাইলে আর ডি এল টাকেই বেছে নিতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি জমা দিয়ে খুব সহজেই এটি করে নাওয়া যায়।   

একটি রিটেইল ফার্মাসির ব্যবসা করতে যে সব দিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন? 

তোমার দোকানে ১০ বাই ১০ স্কয়ার মিটার জায়গার দরকার হবে। দোকানের সেলিং এর উচ্চতা হবে ৯ দশমিক ৫ এর উপরে। 

দোকানের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ভালো হওয়া উচিত। অবশ্যাই দোকানটায় না গরম না ঠান্ডা এমন ভাব বজায় রাখতে এসিরও প্রয়োজন আছে। কেননা এমন আবহাওয়ায় ঔষধ ভালো থাকে। তাছারা কিছু ঔষধ আছে যেগুলো রাখতে ফ্রিজের দরকার পরে সেজন্য একটি ফ্রিজো রাখতে পারো। 

মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ গুলো রাখার জন্য আলাদা সেল করা যেতে পারে। এতে করে খুব সহজেই সেগুলো চিহ্নিত করা যাবে এবং গ্রাহককে ঔষধ দেওয়ার সময়ে ভুল হয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। 

ফার্মেসি ব্যবসা কি এবং কেমন
ফার্মেসি ব্যবসা কি এবং কেমন

দোকান ডেকোরেশন করতে যা লাগেঃ

স্লাডিং কাঁচের শোকেস, ডিসপ্লে র‍্যাক, ফার্মাসি র‍্যাক, ডয়ার সহ কাউন্টার, মেডিকেল স্টোর কাউন্টার, ক্যাশ কাউন্টার ও কম্পিউটার কাউন্টার। আপনার দোকানটি কিভাবে ডেকোরেশন করবেন তা নির্ভর করবে আপনি কেমন এলাকায় দোকানঅটি করছেন তার উপরে। এক্ষেত্রে আসে পাশের দোকানগুলোও দেখে নিতে পারেন।

মেডিকেল ফার্মাসিস্ট জন্য ঔষধ কোথায় কিনতে পাবে?

তুমি যে এলাকায় তোমার মেডিকেল ফার্মাসির দোকান শুরু করতে যাচ্ছ সেই এলাকায় এরকম আরো বেশকিছু দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখবে যে  কোন কোন কোম্পানি সেই সকল দোকানগুলোতে ঔষধ সরবরাহ করে। এরপর তুমি  ঐ কোম্পানির এজেন্টদের কন্টাক্ট নাম্বার সংগ্রহ করে তাদের সাথে যোগাযোগ করে পাইকারি দরে খুব সহজেই তোমার দোকানের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রাদি সংগ্রহ করতে পারো

বিক্রিতে কেমন লাভ আসে

চলতি মোহনায় একটা মাঝারি ধরনের ওষুধের দোকানে যদি ৩-৪ লাখ টাকার ইনভেস্ট থাকে, তাহলে মাস শেষে এখান থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আর এভারেজ হিসেব করে দেখা যায় যে, ওষুধ বিক্রিতে শতকরা ১২-১৩ শতাংশ লাভ থাকে। কোন কোন ওষুধে একটু বেশী আবার কোনটাতে কম থাকে। তবে সবকিছু মিলিয়ে ওষুধ ব্যবসায় অল্প টাকা ইনভেস্ট করে মাস শেষে ভালো মুনফা অর্জন করা সম্ভব।

ব্যবসায় রিস্ক কেমন

এই ব্যবসা করার জন্য রানিং পয়েন্ট হতে হবে। যদি দোকান রানিং পয়েন্টে না হয় তাহলে, পোডাক্টের এক্সপায়ার ডেট শেষ হয়ে গেলে সেটা বাদ দিয়ে দিতে হয়। সেক্ষেত্রে লসের সম্মুখিন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কেমন পুঁজি বিনিয়োগ করতে হতে পারে ? 

দোকান করার জায়গা টা যদি তোমার নিজের হয় তাহলে তো দোকান ভাড়া লাগছে না অন্যথায় ভাড়ার তাকা তো লাগবেই। এই ভাড়া কম বেশী হতে পারে। ভাড়ার বিষয়টি আসলে নির্ভর করে তুমি কেমন দোকান কেমন এলাকায় নিচ্ছ তার উপরে। 

তোমার মেডিকেল সামগ্রী স্টক ও লাইসেন্স করা বাবদ ৪.৫ থেকে ৫লাখ রুপি খরচ হতে পারে। এর সাথে তোমার দোকানের ডেকোরেশনটা জুরে দিলে আরও আলাদাভাকে একেবারে সর্বনিম্ন ১ লাখ রুপি খরচ হবে। আবার তোমাকে যদি একজন ফার্মাসিস্ট রাখতে হয় তার বেতন তো আছেই। সব মিলিয়ে একটা ছোটখাটো কিন্তু ভাল মানের মেডিকেল ফার্মাসির ব্যবসার জন্য ৫ থেকে ৭ লাখ রুপি বিনিয়োগ করলেই চলবে। 

মেডিকেল ফার্মেসির ব্যবসা থেকে কেমন আয় হয়?  

ফার্মেসি ব্যবসা কি এবং কেমন
ফার্মেসি ব্যবসা কি এবং কেমন

মেডিকেল ফার্মেসির ব্যবসায় আপনি ৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত আয় করতে পারেন। যে সকল ওষুধগুলো জেনেটিক সেগুলো বিক্রি করে খুব বেশি আয় করা যায়। আর যেগুলো ব্র্যান্ডেড সেগুলো বিক্রি করে একটু কম আয় হয়। বিষয়গুলো মূলত নির্ভর করে তুমি তোমার কাস্টমারকে কেমন ডিসকাউন্ট দিচ্ছ তার উপরে। তবে সর্বসাকুল্যে তোমার ৫  থেকে 20 শতাংশ পর্যন্ত কাস্টমারকে  ডিসকাউন্ট দিয়েও আয় করতে পারেন।

শিক্ষিত বেকারদের জন্য এই ব্যবসায় সম্ভাবনা

আমাদের দেশের বেকার সমস্যা চরমে। তাই বেকার যুবকেরা একটা সময় হতাশাগ্রস্থ হয়ে দেশের বাহিরে পাড়ি জমানোর কথা চিন্তা করেন। তাদের মধ্যে অনেকে উচ্চ মাধ্যমিক থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেও বেকার সমস্যায় ভূগছেন। তারা যদি অল্প পুঁজি (আনুমানিক তিন থেকে চার লাখ টাকা) নিয়ে ওষুধ ব্যবসা শুরু করে তাহলেও আস্তে আস্তে সাফল্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এখন তিন-চার লাখ টাকা ব্যবস্থা করা কারো জন্য অসাধ্য হবেনা। যেখানে তারা ৫/৭ লাখ টাকা দিয়ে দেশের বাহিরে যাওয়ার চিন্তা করছেন, সেখানে তারা যদি এর থেকেও অনেক কম পুঁজি নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করে, তবে সেটা তাদের জন্য সম্ভাবনার পথ তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে ওষুদের ব্যবসা সমাজের মধ্যে অত্যন্ত ভদ্র ব্যবসা এবং এখানে সম্মানও পাওয়া যায়।

সবমিলিয়ে মেডিকেল ফার্মা ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা।  তুমি দু’বছরের ডিএমডি কোর্স করে নিজেই ফার্মাসিস্ট হিসেবে এই ব্যবসা শুরু করতে পারো। তাছাড়া ব্যবসার যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয়গুলো তোমার লোকাল সরকারি হাসপাতালের ড্রাগ ইনস্পেক্টর এর সাথে যোগাযোগ করলে পেয়ে যাবে।  এছাড়াও যদি তুমি তোমার এলাকার ড্রাগ এসসিয়েশন গুলোর সাথে যোগাযোগ করো তবে তোমাকে ওরাই তোমার ব্যবসার শুরু করার জন্য যে সকল প্রসেস রয়েছে সে ধাপগুলো সমাধা করতে বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে সহয়তা করবে। তাই আর দেরী না করে এখন আইডিয়াটা কাজে লাগিয়ে সফল উদ্যোক্তা বনে যাও। 

ফার্মেসি ব্যবসা কি এবং কেমন

ফার্মেসি ব্যবসা কি এবং কেমন

আরও পড়ুন 

বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজসমূহের তালিকা

ঢাকা মেডিকেল কলেজ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button