BCS PreparationNTRCA Preparation

বাংলা সাহিত্যের যুগ

ADX Ads

Table of Contents

ADX ads 2

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস

বাংলা সাহিত্যের যুগ

(BCS প্রিলিমিনারিতে “বাংলা সাহিত্যের যুগ” থেকে  ১৫ নম্বর থাকবে এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায়ও এ অধ্যায় থেকে প্রশ্ন থাকে)

বাংলা  সাহিত্যের যুগ তিনটি ভাগে বিভক্ত:

১. আদিযুগ (৬৫০-১২০০ খ্রী:)

২. মধ্যযুগ (১২০১-১৮০০ খ্রী:)

৩. আধুনিক যুগ (১৮০১ খ্রী: -বর্তমান)

*অন্ধকার যুগঃ ১২০১-১৩৫০ খ্রী।

আধুনিক বাংলা ভাষার পরিধি শুরু হয়েছে—–১৮০১ সাল থেকে।

প্রস্তুতিপর্বঃ ১৮০০-১৮৬০,

বিকাশপর্বঃ ১৮৬০-১৯০০,

রবীন্দ্রপর্বঃ ১৯০০-১৯৩০,

রবীন্দ্রোত্তরঃ ১৯৩০-১৯৪৭ 

বাংলাদেশঃ ১৯৪৭-বর্তমান

আদি যুগঃ

বাংলা সাহিত্যের আদিযুগের ব্যাপ্তিকালঃ ৬৫০ থেকে ১২০০ খ্রী।

খ্রিষ্টীয় দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে রচিত চর্যা পদাবলি ছিল সহজিয়া বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের সাধনসংগীত

খনার বচন বাংলা সাহিত্যেরঃ আদি যুগের সৃষ্টি

খনার বচন আলোকপাত করেঃ কৃষি সংক্রান্ত বিষয়ে

“আপণা মাংসে হরিণা বৈরী” লিখেছেনঃ ভুসুকুপা

সান্ধভাষার প্রয়োগ দেখা যায়ঃ চর্যাপদে

বাংলা সাহিত্যের যুগ

Origin and Development of Bengali Language বা ODBL বা “বাঙলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ” গ্রন্থটির লেখকঃ ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যয়

চর্যাপদঃ

বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শনের নামঃ চর্যাপদ

বাংলা সাহিত্যের প্রখম কবিতা সংকলনের নামঃ চর্যাপদ

চর্যা শব্দের অর্থঃ আচরন

চর্যাপদের অপর নামসমূহঃ চর্যাচর্যবিনিশ্চয়, চর্যাগীতিকোষ, চর্যাগীতি

চর্যাপদ নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থাগার থেকে আবিষ্কার করেনঃ ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী

ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর উপাধিঃ মহামহোপাধ্যয়

চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয়ঃ ১৯০৭ সালে

চর্যাপদ গ্রন্থে মোট পদ পাওয়া গেছেঃ সাড়ে ছিচল্লিশটি 

চর্যাপদের খন্ডিত আকারে পাওয়া যায়ঃ ২৩ নং পদ

চর্যাপদের পদ পাওয়া যায়নিঃ ২৪, ২৫, ৪৮

বাংলা সাহিত্যের আদি কবিঃ লুইপা

চর্যাপদে সবচেয়ে বেশি পদ রচনা করেছেনঃ কাহ্নপা

চর্যাপদের আধুনিকতম পদকর্তাঃ সরহ বা ভুসুকু

চর্যাপদের বাঙালি পদকর্তাঃ শবরপা

চর্যাপদের একমাত্র নারী পদকর্তাঃ  কুক্কুরীপা

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের রচনাকালঃ ৬৫০ খ্রিষ্টাব্দ

অধিকাংশের মতে চর্যাপদের রচনাকালঃ ৯৫০ – ১২০০ খ্রিষ্টাব্দ

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের পদ সংখ্যাঃ ৫০ টি

সুকুমার সেনের মতে চর্যাপদের পদ সংখ্যাঃ ৫১ টি

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের পদকর্তাঃ ২৩ জন

সুকুমার সেনের মতে চর্যাপদের পদকর্তাঃ ২৪ জন

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের প্রথম পদকর্তাঃ শবরপা

অধিকাংশের মতে চর্যাপদের প্রথম পদটির রচয়িতাঃ লুইপা

মধ্যযুগঃ

মধ্যযুগের সাহিত্যধারা ছিল দেবদেবী নির্ভর বা ধর্মনির্ভর।

দেবদেবীর গুণকীর্তন করাই ছিল এই যুগের সাহিত্যের উদ্দেশ্য।

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত। যেমন – মঙ্গলকাব্য,  অনুবাদ সাহিত্য, বৈষ্ণব পদাবলী, জীবনী সাহিত্য, নাথ সাহিত্য, রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ইত্যাদি।

অন্ধকার যুগ (১২০১১৩৫০খ্রি.):

১২০৪ সালে ইখতিয়ারউদ্দিন বখতিয়ার খিলজী মাত্র ১৭ জন সৈন্য নিয়ে  অতর্কিত ক্ষিপ্রবেগে বাংলার  সেন বংশের শেষ শাসক লক্ষণ সেনের রাজধানী  নদীয়া বিনা বাধায় জয় করে এদেশে মুসলমান শাসনের সূত্রপাত করেন। তুর্কি আক্রমণকারীদের ভয়ে বৌদ্ধ কবিগণ বঙ্গদেশ থেকে নেপালে শরনার্থী  হয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়। এ কারণে বাংলা সাহিত্য জগতে শূন্যতা দেখা  দেয়।

১২০১- ১৩৫০ সময়কালকে এই শূন্যতার সময় বিবেচনা করে একে বাংলা  সাহিত্যের অন্ধকার যুগ বা বন্ধ্যা যুগ বলা হয়।

তবে বর্তমানে নিচের দুটো গ্রন্থকে অন্ধকার যুগের সাহিত্য বলে মনে করা হয়-

গ্রন্থের নামঃ                    রচয়িতাঃ

(ক)শূন্যপূরাণ —              রামাই পণ্ডিত 

(খ) সেকশুভোদয়া —         হলায়ূধ মিশ্র

 এ দুটো গ্রন্থ গদ্যে-পদ্যে মিশ্রিত এক ধরনের চম্পুকাব্য।

 রামাই পণ্ডিত রচিত ধর্মপূজার শাস্ত্রগ্রন্থ শূন্যপূরাণ।

 ’নিরঞ্জনের উষ্মা’ কবিতাটি শূন্যপূরাণের অন্তর্গত। এখানে হিন্দু ও  বৌদ্ধধর্মের আলোচনা আছে।

‘সেক শুভোদয়া’র  রচয়িতা হলায়ূধ মিশ্রকে লক্ষণ সেনের সভাকবি বলে ধারণা  করা হয়।

শ্রীকৃষ্ণকীর্তনকাব্য

 বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের আদি নিদর্শন হল ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’।

’শূন্যপূরাণ’ ও ‘সেক শুভোদয়া’ -নামক গ্রন্থ দুটোর রচনা ঠিক অন্ধকার যুগেই   হয়েছিল এমন কোন নিশ্চিত তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে নেই। ‘শূন্যপূরাণ’ অন্ধকার যুগেই রচিত হয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারলে একেই হয়ত  আমরা মধ্যযুগের আদি নিদর্শন বলতাম।

 ১৯০৭ সালে বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ পশ্চিমবঙ্গের  বাঁকুড়া জেলার  কাঁকিল্যা গ্রামের এক গৃহস্থের গোয়ালঘর থেকে ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্য  উদ্ধার করেন।

 গ্রন্থটি ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে বসন্তরঞ্জন রায়ের  সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।

 ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে’র রচয়িতা হলেন -বড়ু চণ্ডীদাস। তাঁর আসল নাম অনন্ত  বড়ুয়া।

 এখানে মনে রাখতে হবে, বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন ‘চর্যাপদ’ এবং দ্বিতীয়  নিদর্শন ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’।‘চর্যাপদে’র রচয়িতা হলেন ২৪ জন কিন্তু 

‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের রচয়িতা হলেন ১ জন(বড়ু চণ্ডীদাস)। তাই বলা যায়,

বাংলা সাহিত্যের প্রথম একক কবির রচিত গ্রন্থ ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’। 

‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে’র আলোচ্য বিষয় হল রাধা- কৃষ্ণের প্রেমলীলা।

এখানে রূপকের মাধ্যমে  ‘রাধা’ বলতে  সৃষ্টি/ভক্ত/জীবাত্মাকে এবং ‘কৃষ্ণ’  বলতে স্রষ্টা/ভগবান/ পরমাত্মাকে বুঝানো হয়েছে। তার মানে রাধা-কৃষ্ণের  প্রেমের মাধ্যমে বৈষ্ণবতত্ত্বের এক গূঢ় রহস্য কথা ব্যক্ত হয়েছে।যেখানে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের মাধ্যমে জীবাত্মা-পরমাত্মার প্রেমকে বুঝানো হয়েছে।

 আর এই প্রেমের দূতিয়ালি বা ঘটকালি করেছেন বড়াই।

‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের প্রধান চরিত্র হল ৩টি(রাধা, কৃষ্ণ ও বড়াই)।

সর্বজন স্বীকৃত ও খাঁটি বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম গ্রন্থ ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’।

 মধ্যযুগের আদি কবি বড়ু চণ্ডীদাস।

‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’কাব্যের মূল নাম ছিল ‘শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ’।১৯১৬ সালে  প্রকাশের সময় বসন্তরঞ্জন রায় এর নাম পরিবর্তন করে  ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’রাখেন।

‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে ১৩ টি খণ্ড ও ৪১৮ টি পদ আছে।

বৈষ্ণব পদাবলী (মধ্যযুগের গীতিকবিতা)-

রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা অবলম্বনে এই অমর কবিতাবলির  সৃষ্টি।অর্থাৎ বৈষ্ণব পদাবলীতেও ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে’র মত বৈষব তত্ত্বের গুঢ় রহস্য কথা  আলোচিত হয়েছে। তবে ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্য  রাধা- কৃষ্ণকে নিয়ে বড়ু চণ্ডীদাস রচিত ১৩ খণ্ডে 

বিভক্ত ৪১৮টি পদ সংবলিত বিশাল এক কাহিনি কাব্য। কিন্তু  বৈষ্ণব  পদাবলী(পদ=কবিতা,পদাবলী =কবিতাবলি) রাধা-কৃষ্ণকে নিয়ে রচিত বিভিন্ন  কবির কিছু খণ্ড কবিতা(স্বল্প দৈর্ঘের কবিতা)।

 বৈষ্ণব পদাবলীতে রাধা- কৃষ্ণের মানবিক আবেদন ফুটে উঠেছে।

 বৈষ্ণব পদাবলীর আদি কবি চণ্ডীদাস। তাঁর কয়েকটি বিখ্যাত উক্তি  – “সবার  উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।“ “সই, কেবা শুনাইল শ্যাম নাম?” “সই,  কেমনে ধরিব হিয়া,আমার বঁধুয়া আন বাড়ি যায়, আমার আঙিনা দিয়া।“ 

 পদাবলীর আরেকজন বিখ্যাত কবি হলেন বিদ্যাপতি। তিনি মিথিলার রাজসভার  কবি ছিলেন।তিনি ব্রজবুলি(বাংলা+মৈথিলি) নামক এক কৃত্রিম  সাহিত্যিক ভাষায়  পদ রচনা করতেন। বাংলা ভাষায় না লিখেও তিনি বাংলা সাহিত্যের আলোচিত  কবি।

 তাই  বিদ্যাপতিকে বৈষ্ণব পদাবলীর অবাঙালি কবি বলা হয়।

 ব্রজভাষা মথুরার ভাষা।

 বিদ্যাপতির উপাধি হল – মিথিলার কোকিল,কবি কণ্ঠহার, অভিনব জয়দেব।

 বিদ্যাপতির উক্তি –   এ ভরা বাদর  মাহ ভাদর শূন্য মন্দির মোর।

পদাবলীর কবি জ্ঞানদাস ছিলেন চণ্ডীদাসের ভাবশিষ্য। তাঁর বিখ্যাত উক্তি –  “সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু অনলে পুড়িয়া গেল।“ “রূপ লাগি আঁখি ঝুরে গুণে মন  প্রতি অঙ্গ লাগি কান্দে প্রতি অঙ্গ মোর।”

বৈষ্ণব পদাবলীর একজন সংগ্রাহক হলেন – বাবা আউল মনোহর দাস।

চৈতন্যদেব জীবনী সাহিত্য

শ্রীচৈতন্যদেব ছিলেন বৈষ্ণব  ধর্মের প্রচারক। শ্রীচৈতন্যদেব ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দে ১৮ই ফেব্রুয়ারি শনিবারে নব্দ্বীপে  জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৫৩৩ খ্রিস্টাব্দে পুরীতে মারা যান। চৈতন্যের বাল্য নাম ছিল  নিমাই,দেহবর্ণের জন্য নাম হয় গোরা বা গৌরাঙ্গ, 

প্রকৃত নাম ছিল বিশ্বম্ভর,সন্ন্যাস গ্রহণের পর শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য, সংক্ষেপে  ‘চৈতন্য’ নামে পরিচিত হন। কারো জীবন নিয়ে যে সাহিত্য রচিত হয় তাকে জীবনী সাহিত্য  বা চরিত সাহিত্য  বলে।বাংলা সাহিত্যে সর্বপ্রথম চৈতন্যদেবের জীবনী নিয়ে সাহিত্য রচিত হয়। চৈতন্যদেবের মৃত্যুর  পর চৈতন্যদেবের  ভক্তরা তাঁর  জীবনী নিয়ে সাহিত্য 

রচনা শুরু করে। চৈতন্যদেবের জীবন নিয়ে তাঁর যে ভক্ত সর্বপ্রথম সাহিত্য লিখেন তিনি হলেন –  বৃন্দাবন দাস এবং গ্রন্থটির নাম ‘শ্রীচৈতন্যভাগবত’। তবে কৃষ্ণদাস কবিরাজের রচিত ‘শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত’ গ্রন্থটি চৈতন্য জীবনী  কাব্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। তাই  কৃষ্ণদাস কবিরাজকে চৈতন্য জীবনী কাব্যের 

শ্রেষ্ঠ কবি বলে।বাংলা সাহিত্যে একটি পংক্তি না লিখেও চৈতন্যদেবের নামে একটি যুগের সৃষ্টি  হয়েছে।বাংলা সাহিত্যে চৈতন্য জীবনী গ্রন্থ ‘কড়চা’ নামে পরিচিত। ‘কড়চা’ শব্দের  শাব্দিক অর্থ ডায়রি বা দিনলিপি।

বাংলা সাহিত্যে  –   প্রাক চৈতন্য যুগ হল (১২০১-১৫০০খ্রি ) ও  চৈতন্য যুগ  হল(১৫০০-১৭০০খ্রি.)

বাংলা ভাষার আগে সংস্কৃত ভাষায় চৈতন্য জীবনী গ্রন্থ রচিত হয়েছে।সংস্কৃত   ভাষায় যিনি প্রথম চৈতন্য জীবনী গ্রন্থ লিখেন  –  মুরারি গুপ্ত।

নবীবংশ, রসুল বিজয় – গ্রন্থগুলোর রচিয়তা হলেন সৈয়দ সুলতান।

প্রাকআধুনিক যুগ (১৮০০খ্রিস্টাব্দ১৯০০খ্রিস্টাব)-

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত (জন্ম: ১৮১২ – মৃত্যু: ১৮৫৯) ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন বাঙ্গালী কবি ও সাহিত্যিক। তিনি ‘সংবাদ প্রভাকর'(বা ‘সম্বাদ প্রভাকর’)এর সম্পাদক। কিন্তু  ব্যাপক ভাবে বলতে গেলে তিনি ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন কবি ও সাহিত্যিক। তাঁর হাত  ধরেই মধ্যযুগের গণ্ডি পেড়িয়ে বাংলা কবিতা আধুনিকতার পথে নাগরিক রূপ পেয়েছিল।  তিনি “গুপ্ত কবি” নামে সমধিক পরিচিত।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ই মে, ১৮৬১৭ই আগস্ট, ১৯৪১) (২৫ বৈশাখ, ১২৬৮২২  শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)-

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাঁকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব,কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা  হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ  ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। 

তাঁর সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও  ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।  রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২  খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের 

যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডেচিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া  তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায়  অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি  কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি  সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (২৫ জানুয়ারি, ১৮২৪২৯ জুন, ১৮৭৩)-

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঊনবিংশ  শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও নাট্যকার তথা বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম  পুরোধা ব্যক্তিত্ব। ব্রিটিশ ভারতের যশোর জেলার এক সম্ভ্রান্ত কায়স্থ বংশে জন্ম 

হলেও মধুসূদন যৌবনে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে মাইকেল মধুসূদন নাম গ্রহণ করেন  এবং পাশ্চাত্য সাহিত্যের দুর্নিবার আকর্ষণবশত ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনায়  মনোনিবেশ করেন। জীবনের দ্বিতীয় পর্বে মধুসূদন আকৃষ্ট হন নিজের মাতৃভাষার  প্রতি। এই সময়েই তিনি বাংলায় নাটক, প্রহসন ও কাব্যরচনা করতে শুরু করেন।  মাইকেল মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। তাঁর  সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে  রচিত মেঘনাদবধ কাব্য নামক মহাকাব্য। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য  গ্রন্থাবলি: দ্য ক্যাপটিভ লেডি, শর্মিষ্ঠা, কৃষ্ণকুমারী (নাটক), পদ্মাবতী  (নাটক),বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ, একেই কি বলে সভ্যতা, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, ব্রজাঙ্গনা কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলী, হেকটর  বধ ইত্যাদি। মাইকেলের ব্যক্তিগত জীবন ছিল নাটকীয় এবং বেদনাঘন। মাত্র ৪৯ বছর  বয়সে কলকাতায় কপর্দকশূন্য করুণ অবস্থায় মৃত্যু হয় এই মহাকবির।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (জুন ২৭, ১৮৩৮এপ্রিল , ১৮৯৪)-

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় উনিশ  শতকের বাঙালি সাহিত্যিক ও সাংবাদিক। বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশে তাঁর অসীম  অবদানের জন্যে তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। তাঁকে  সাধারণত প্রথম আধুনিক বাংলা ঔপন্যাসিক হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে গীতার  ব্যাখ্যাদাতা হিসাবে, সাহিত্য সমালোচক হিসাবেও তিনি বিশেষ খ্যাতিমান। তিনি  জীবিকাসূত্রে ব্রিটিশ রাজের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষার আদি সাহিত্যপত্র  বঙ্গদর্শনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। তিনি ছদ্মনাম হিসেবে কমলাকান্ত নামটি  বেছে নিয়েছিলেন।

আধুনিক যুগ (১৯০০খ্রিস্টাব্দ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ)-

কাজী নজরুল ইসলাম (মে ২৫, ১৮৯৯ আগস্ট ২৯, ১৯৭৬),(জ্যৈষ্ঠ ১১, ১৩০৬ –  ভাদ্র ১২, ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ)-

অগ্রণী বাঙালি কবি, বিংশ শতাব্দীর অন্যতম  জনপ্রিয়বাঙালি কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, সংগীতস্রষ্টা, দার্শনিক, যিনি বাংলা কাব্যে  অগ্রগামী ভূমিকার সঙ্গে সঙ্গে প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। 

বাঙালী মণীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন নজরুল। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম সাহিত্যিক,  দেশপ্রেমী এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবি।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (সেপ্টেম্বর ১৫, ১৮৭৬জানুয়ারি ১৬, ১৯৩৮)-

জনপ্রিয়তম  বাঙালি কথাসাহিত্যিক। বাঙলা ছাড়াও তাঁর লেখা বহু ভারতীয় ও বিদেশী ভাষায় অনূদিত  হয়েছে। তিনি কখনও কখনও অনিলা দেবী ছদ্মনামে লিখতেন।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১২ই সেপ্টেম্বর, ১৮৯৪১লা নভেম্বর, ১৯৫০)-

ছিলেন  একজন জনপ্রিয় ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক। তিনি মূলত উপন্যাস ও ছোটগল্প  লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। পথের পাঁচালী ও অপরাজিত তাঁর সবচেয়ে বেশি পরিচিত  উপন্যাস।

জীবনানন্দ দাশ (ফেব্রুয়ারি ১৮, ১৮৯৯অক্টোবর ২২, ১৯৫৪; বঙ্গাব্দঃ ফাল্গুন ১৩০৫কার্তিক , ১৩৬১)-

ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাঙালি  কবি, লেখক, প্রাবন্ধিক এবং অধ্যাপক। তাকে বাংলাভাষার “শুদ্ধতম কবি” বলে  আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।

সুকুমার রায় (১৮৮৭১৯২৩) (ইংরেজি ভাষা: Sukumar Roy)

একজন বাঙালি শিশুসাহিত্যিক ও ভারতীয় সাহিত্যে “ননসেন্স রাইমের” প্রবর্তক। তিনি  একাধারে লেখক, ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, রম্যরচনাকার, প্রাবন্ধিক ও নাট্যকার।  তিনি ছিলেন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সন্তান এবং তাঁর  পুত্র খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়। তাঁর লেখা কবিতার বই আবোল 

তাবোল, গল্প হযবরল, গল্প সংকলন পাগলা দাশু এবং  নাটক চলচ্চিত্তচঞ্চরী বিশ্বসাহিত্যে সর্বযুগের সেরা “ননসেন্স” ধরণের  ব্যঙ্গাত্মক শিশুসাহিত্যের অন্যতম বলে মনে করা হয়।

উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী (১০ই মে, ১৮৬৩২০শে ডিসেম্বর, ১৯১৫)-

বিখ্যাত বাঙালি শিশুসাহিত্যিক, বাংলা ছাপাখানার অগ্রপথিক। তিনি ছিলেন একাধারে লেখক চিত্রকর, প্রকাশক, শখের জ্যোতির্বিদ, বেহালাবাদক ও সুরকার। সন্দেশ  পত্রিকা তিনিই শুরু করেন যা পরে তাঁর পুত্র সুকুমার রায় ও পৌত্র সত্যজিৎ 

রায় সম্পাদনা করেন। গুপি-গাইন-বাঘা-বাইন, টুনটুনির বই ইত্যাদি তাঁরই অমর সৃষ্টি।  তাঁর পৈত্রিক নাম ছিল কামদারঞ্জন রায়। 

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত (১৯শে সেপ্টেম্বর, ১৯০৩২৯শে জানুয়ারি, ১৯৭৬)-

একজন  বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক ও সম্পাদক। পিতার কর্মস্থল নোয়াখালী শহরে তাঁর জন্ম  হয়। তবে তাঁর পরিবারের আদি নিবাস ছিল বর্তমান মাদারিপুর জেলায়। তাঁর বাবা  রাজকুমার সেনগুপ্ত নোয়াখালী আদালতের আইনজীবী ছিলেন। তাঁর স্মৃতিচারণমূলক 

গ্রন্থ কল্লোল যুগ (১৯৫০) পাঠক-মহলে বেশ সাড়া জাগায়। সাহিত্য ও সাংবাদিকতায়  বিশেষ অবদানের জন্য তিনি জগত্তারিণী পুরস্কার, রবীন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৫) ও  শরৎচন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৫) লাভ করেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ জানুয়ারি কলকাতায়  তাঁর মৃত্যু হয়।

সৈয়দ মুজতবা আলী (সেপ্টেম্বর ১৩, ১৯০৪ – ফেব্রুয়ারি ১১, ১৯৭৪) একজন বিংশ  শতকী বাঙালি সাহিত্যিক। তিনি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ঔপন্যাসিক,  ছোটগল্পকার, অনুবাদক ও রম্যরচয়িতা। তিনি তাঁর ভ্রমণকাহিনীগুলির জন্য বিশেষভাবে জনপ্রিয়। বহুভাষাবিদ সৈয়দ মুজতবা আলীর রচনা একই সঙ্গে পাণ্ডিত্যএবং রম্যবোধে পরিপুষ্ট।

সুকান্ত ভট্টাচার্য (১৫ই আগস্ট, ১৯২৬১৩ই মে, ১৯৪৭)-

বাংলা  সাহিত্যের মার্কসবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী এবং প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী তরুণ  কবি। সুকান্ত কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা দৈনিক স্বাধীনতার (১৯৪৫) ‘কিশোর সভা’  বিভাগ সম্পাদনা করতেন। মার্কসবাদী চেতনায় আস্থাশীল কবি হিসেবে সুকান্ত কবিতা  লিখে বাংলা সাহিত্যে স্বতন্ত্র স্থান করে নেন।তার কবিতায় অনাচার ও বৈষ্যমের  বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ পাঠকদের সংকচিত করে তোলে। গণমানুষের প্রতি গভীর  মমতায় প্রকাশ ঘটেছে তাঁর কবিতায়। তাঁর রচনাবলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য  হলো: ছাড়পত্র (১৯৪৭), পূর্বাভাস (১৯৫০), মিঠেকড়া (১৯৫১), অভিযান (১৯৫৩), ঘুম  নেই (১৯৫৪), হরতাল (১৯৬২), গীতিগুচ্ছ (১৯৬৫) প্রভৃতি। পরবর্তীকালে উভয় বাংলা  থেকে সুকান্ত সমগ্র নামে তাঁর রচনাবলি প্রকাশিত হয়। সুকান্ত ফ্যাসিবাদবিরোধী  লেখক ও শিল্পীসংঘের পক্ষে আকাল (১৯৪৪) নামে একটি কাব্যগ্রন্থ সম্পাদনা  করেন।

বাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগবাংলা সাহিত্যের যুগ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button